
ভাগলপুর দেওয়ান বাড়ি
কিশােরগঞ্জ জেলার অন্তর্গত বাজিতপুর উপজেলাধীন প্রসিদ্ধ ভাগলপুর দেওয়ানবাড়ি অবস্থিত। এ দেওয়ানবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা দেওয়ান আদাম খাঁ। দেওয়ান আদাম খাঁ নবাব ঈশা খাঁর ছেলে। আদাম খাঁর ৭ম অধস্তন পুরুষ দেওয়ান ইব্রাহিম খা! ইব্রাহীম খাঁ পর্যন্ত এ বাড়িতে নবাব ঈশা খাঁর বংশধরগণ ছিলেন। দেওয়ান ইব্রাহিম খাঁর কোনাে ছেলে সন্তান ছিল না।
হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং রাজপরিবারের দেওয়ান নসিবুর রাজা দেওয়ান ইব্রাহিম খার কন্যা দেওয়ান আমাতুজ জোহরাকে বিবাহ করে এ বাড়িতে বসবাস শুরু করেন এবং পরগনার শাসনভার প্রাপ্ত হন। দেওয়ান নসিবুর রাজার ছেলে দেওয়ান আহমেদুর রাজা। (রহ.) ওরফে পাগলা দেওয়ান। পাগলা দেওয়ানের কোনাে পুত্র সন্তান ছিল না। তাঁর কন্যা আকিকুনন্নেসা বানুকে দ্বিতীয় বিবাহ করেন সৈয়দ আবদুল হাশিম (লাল মিয়া) আবদল হাশিম অষ্টগ্রাম থেকে এখানে এসে বিবাহ করে বসবাস শুরু করেন এবং বিশাল ভূ-সম্পতি মালিকানাসহ পরগণার দেওয়ানী লাভ করেন। | সৈয়দ আবদুল হাশিম সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দিন (রহ.)-এর সরাসরি বংশধর। ভাগলপুর বাড়ির দুটি অংশের পশ্চিমাংশে সৈয়দ আব্দুল হাশিম সাহেবের বংশধরগণ বাস করছেন। আর পূর্বাংশে আকিকুনন্নেসার প্রথম স্বামী সৈয়দ গােলাম রহমান সাহেবের বংশধরগণ বাস করছেন।
সৈয়দ গােলাম রহমান সাহেব ছিলেন বাজিতপুর থানাধিন দিলালপুর সাহেববাডি নিবাসী। তিনি দেওয়ান আকিকুনন্নেসা বানুকে বিবাহ করে জমিদারি পেয়ে ভাগলপুর। দেওয়ান বাড়িতে স্থায়ী হন। শুনা যায় সৈয়দ গােলাম রহমান সাহেবের পূর্বপুরুষ শাহ সৈয়দ আবদুর রহমান (কুতুব সাহেব) মােগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সময় কিশােরগঞ্জের জংগলবাড়ি হয়ে দিলালপুরের মীরমহল্লায় বসতি স্থাপন করেন। সেখানে তাঁর মাজার রয়েছে। মূলত তিনি ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে এখানে আসেন। তিনি আরবের অধিবাসী ছিলেন। বর্তমানে ঐ বাড়িতে কেউ থাকে না। সেখানে আবদুল করিম উচ্চ বিদ্যালয় অবস্থিত।
এ বাড়ির ৫১নং জমিদারি অর্থাৎ ১৫ পরগণার দেওয়ানি ছিল। বাড়ির সামনে একটি সুন্দর কারুকার্য খচিত মসজিদ রয়েছে। মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন নবাব ঈশা খার অবত” পুরুষ দেওয়ান গউস খা। এ মসজিদটিতে মােগল ও সেন বংশীয় স্থাপত্যের নিদশ” রয়েছে। বিশাল বাড়ি, রাস্তা থেকে নেমে কিছুদুর বাগান পার হলেই ১০০ বছর পূর্বের সুন্দর বাংলাে নমুনার দালান। তারপর আরাে কিছুদূর অগ্রসর হলে মূল বাড়িতে প্রবেশ করা যায়। ভিতর বাড়িটিও খুব সুন্দর ফুলের বাগানে সজ্জিত। যে কোনাে মানুষ এ বাড়িতে গেলে তার মন-মানসিকতার পরিবর্তন অনিবার্য।
বাড়ির মায়ার সাথে মানুষগুলােও শিল্পকলায় পরিপূর্ণতা লাভ করে আসছে। ভাবুকের ভাবনার এক নিরবচ্ছিন্ন স্থান এ দেওয়ানবাড়ি। বর্তমানে সবচেয়ে উল্লেখযােগ্য দেওয়ান আহমেদুর রাজা ওরফে পাগলা দেওয়ান (রহ.)-এর মাজার। তিনি বিশাল দেওয়ানি ত্যাগপূর্বক ১৫ বছর নিরুদ্দেশ ছিলেন। তিনি মজুপ ফকির ছিলেন। তাঁর অনেক কারামতের কথা শুনা যায় । ১৪ বছর পর ১লা ফাল্গুন তিনি পুনরায় ভাগলপুর ফিরে আসেন। তখন বহু লােক তাকে দেখতে আসে। সে প্রত্যাবর্তনকে স্মরণ করে প্রতি বছর। ফাল্গুন মাসের প্রথম সােমবার (সাবেক পঞ্জিকানুযায়ী) তার মাজারে বিরাট ওরশ শরিফ মহা ধুমধামে উদযাপিত হয় । বহু পাগলা ফকিরের আগমন এখানে প্রতিনিয়তই হচ্ছে। ৩১শে আষাঢ় ওফাত দিবস উপলক্ষে ওরশ শরিফ উদ্যাপিত হয়।
“চেরাগী মুটুক” প্রকাশ্য ইমামবাড়ি। এ ইমামবাড়িতে মহররমের শােকানুষ্ঠান [ অনুষ্ঠিত হয় । দেওয়ান ইব্রাহিম খাঁ বিবাহ করেন পঠি নরপতির এ বিবি পীরানী বিবি। নামে পরিচিত ছিলেন। তাঁর নাম ছিল সৈয়দ এমনষ্টান বানু। পীরানী বিবি সর্বপ্রথম মহররম অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। বর্তমান দেওয়ানবাড়ি হতে ১ মাইল পশ্চিমে (আনুমানিক) ৩ | একর ২১ শতাংশ ভূমি যা প্রকাশ্যে ইমামবাড়ি নামে পরিচিত, তা মহররম মাসের ১০ তারিখে বিভিন্ন স্থান হতে তাজিয়া মিছিল দেওয়ান বাড়িতে এসে জড়াে হয় এবং এখান থেকে পুনরায় ইমামবাড়িতে গিয়ে মিছিল শেষ হয়। প্রায় ২৫০ বছর পূর্বে এ অনুষ্ঠান শুরু হয় এবং অদ্যাবদি চলছে।
শেরে বাংলা নাজিম উদ্দিন, সােহরাওয়ার্দীসহ সকল নেতাগণই এ বাড়িতে এসেছেন। এ বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা দেওয়ান ইব্রাহিম খা বাঘের সাথে লড়াই করছেন বলে প্রবাদ আছে। তার জমিদারি এলাকার মধ্যে ভৈরব, কুলিয়াচর, নরসিংদীর অর্ধেক পর্যন্ত ছিল। দেওয়ান শ্রাহিম খাঁর ব্যবহৃত ঢাল, তলােয়ার, বল্লম রয়েছে। এ ঐতিহ্যবাহী বাড়ি আজো তার পুরানাে ঐতিহ্য নিয়ে শির উঁচু করে নীরবে দাঁড়িয়ে আছে।
কিশােরগঞ্জ জেলার অন্তর্গত বাজিতপুর উপজেলাধীন প্রসিদ্ধ ভাগলপুর দেওয়ানবাড়ি অবস্থিত। এ দেওয়ানবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা দেওয়ান আদাম খাঁ। দেওয়ান আদাম খাঁ নবাব ঈশা খাঁর ছেলে। আদাম খাঁর ৭ম অধস্তন পুরুষ দেওয়ান ইব্রাহিম খা! ইব্রাহীম খাঁ পর্যন্ত এ বাড়িতে নবাব ঈশা খাঁর বংশধরগণ ছিলেন। দেওয়ান ইব্রাহিম খাঁর কোনাে ছেলে সন্তান ছিল না।
হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং রাজপরিবারের দেওয়ান নসিবুর রাজা দেওয়ান ইব্রাহিম খার কন্যা দেওয়ান আমাতুজ জোহরাকে বিবাহ করে এ বাড়িতে বসবাস শুরু করেন এবং পরগনার শাসনভার প্রাপ্ত হন। দেওয়ান নসিবুর রাজার ছেলে দেওয়ান আহমেদুর রাজা। (রহ.) ওরফে পাগলা দেওয়ান। পাগলা দেওয়ানের কোনাে পুত্র সন্তান ছিল না। তাঁর কন্যা আকিকুনন্নেসা বানুকে দ্বিতীয় বিবাহ করেন সৈয়দ আবদুল হাশিম (লাল মিয়া) আবদল হাশিম অষ্টগ্রাম থেকে এখানে এসে বিবাহ করে বসবাস শুরু করেন এবং বিশাল ভূ-সম্পতি মালিকানাসহ পরগণার দেওয়ানী লাভ করেন। | সৈয়দ আবদুল হাশিম সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দিন (রহ.)-এর সরাসরি বংশধর। ভাগলপুর বাড়ির দুটি অংশের পশ্চিমাংশে সৈয়দ আব্দুল হাশিম সাহেবের বংশধরগণ বাস করছেন। আর পূর্বাংশে আকিকুনন্নেসার প্রথম স্বামী সৈয়দ গােলাম রহমান সাহেবের বংশধরগণ বাস করছেন।
সৈয়দ গােলাম রহমান সাহেব ছিলেন বাজিতপুর থানাধিন দিলালপুর সাহেববাডি নিবাসী। তিনি দেওয়ান আকিকুনন্নেসা বানুকে বিবাহ করে জমিদারি পেয়ে ভাগলপুর। দেওয়ান বাড়িতে স্থায়ী হন। শুনা যায় সৈয়দ গােলাম রহমান সাহেবের পূর্বপুরুষ শাহ সৈয়দ আবদুর রহমান (কুতুব সাহেব) মােগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সময় কিশােরগঞ্জের জংগলবাড়ি হয়ে দিলালপুরের মীরমহল্লায় বসতি স্থাপন করেন। সেখানে তাঁর মাজার রয়েছে। মূলত তিনি ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে এখানে আসেন। তিনি আরবের অধিবাসী ছিলেন। বর্তমানে ঐ বাড়িতে কেউ থাকে না। সেখানে আবদুল করিম উচ্চ বিদ্যালয় অবস্থিত।
এ বাড়ির ৫১নং জমিদারি অর্থাৎ ১৫ পরগণার দেওয়ানি ছিল। বাড়ির সামনে একটি সুন্দর কারুকার্য খচিত মসজিদ রয়েছে। মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন নবাব ঈশা খার অবত” পুরুষ দেওয়ান গউস খা। এ মসজিদটিতে মােগল ও সেন বংশীয় স্থাপত্যের নিদশ” রয়েছে। বিশাল বাড়ি, রাস্তা থেকে নেমে কিছুদুর বাগান পার হলেই ১০০ বছর পূর্বের সুন্দর বাংলাে নমুনার দালান। তারপর আরাে কিছুদূর অগ্রসর হলে মূল বাড়িতে প্রবেশ করা যায়। ভিতর বাড়িটিও খুব সুন্দর ফুলের বাগানে সজ্জিত। যে কোনাে মানুষ এ বাড়িতে গেলে তার মন-মানসিকতার পরিবর্তন অনিবার্য।
বাড়ির মায়ার সাথে মানুষগুলােও শিল্পকলায় পরিপূর্ণতা লাভ করে আসছে। ভাবুকের ভাবনার এক নিরবচ্ছিন্ন স্থান এ দেওয়ানবাড়ি। বর্তমানে সবচেয়ে উল্লেখযােগ্য দেওয়ান আহমেদুর রাজা ওরফে পাগলা দেওয়ান (রহ.)-এর মাজার। তিনি বিশাল দেওয়ানি ত্যাগপূর্বক ১৫ বছর নিরুদ্দেশ ছিলেন। তিনি মজুপ ফকির ছিলেন। তাঁর অনেক কারামতের কথা শুনা যায় । ১৪ বছর পর ১লা ফাল্গুন তিনি পুনরায় ভাগলপুর ফিরে আসেন। তখন বহু লােক তাকে দেখতে আসে। সে প্রত্যাবর্তনকে স্মরণ করে প্রতি বছর। ফাল্গুন মাসের প্রথম সােমবার (সাবেক পঞ্জিকানুযায়ী) তার মাজারে বিরাট ওরশ শরিফ মহা ধুমধামে উদযাপিত হয় । বহু পাগলা ফকিরের আগমন এখানে প্রতিনিয়তই হচ্ছে। ৩১শে আষাঢ় ওফাত দিবস উপলক্ষে ওরশ শরিফ উদ্যাপিত হয়।
“চেরাগী মুটুক” প্রকাশ্য ইমামবাড়ি। এ ইমামবাড়িতে মহররমের শােকানুষ্ঠান [ অনুষ্ঠিত হয় । দেওয়ান ইব্রাহিম খাঁ বিবাহ করেন পঠি নরপতির এ বিবি পীরানী বিবি। নামে পরিচিত ছিলেন। তাঁর নাম ছিল সৈয়দ এমনষ্টান বানু। পীরানী বিবি সর্বপ্রথম মহররম অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। বর্তমান দেওয়ানবাড়ি হতে ১ মাইল পশ্চিমে (আনুমানিক) ৩ | একর ২১ শতাংশ ভূমি যা প্রকাশ্যে ইমামবাড়ি নামে পরিচিত, তা মহররম মাসের ১০ তারিখে বিভিন্ন স্থান হতে তাজিয়া মিছিল দেওয়ান বাড়িতে এসে জড়াে হয় এবং এখান থেকে পুনরায় ইমামবাড়িতে গিয়ে মিছিল শেষ হয়। প্রায় ২৫০ বছর পূর্বে এ অনুষ্ঠান শুরু হয় এবং অদ্যাবদি চলছে।
শেরে বাংলা নাজিম উদ্দিন, সােহরাওয়ার্দীসহ সকল নেতাগণই এ বাড়িতে এসেছেন। এ বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা দেওয়ান ইব্রাহিম খা বাঘের সাথে লড়াই করছেন বলে প্রবাদ আছে। তার জমিদারি এলাকার মধ্যে ভৈরব, কুলিয়াচর, নরসিংদীর অর্ধেক পর্যন্ত ছিল। দেওয়ান শ্রাহিম খাঁর ব্যবহৃত ঢাল, তলােয়ার, বল্লম রয়েছে। এ ঐতিহ্যবাহী বাড়ি আজো তার পুরানাে ঐতিহ্য নিয়ে শির উঁচু করে নীরবে দাঁড়িয়ে আছে।


Join the conversation
You can post now and register later. If you have an account, sign in now to post with your account.